মাদকাসক্তি - Drug Addiction in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

January 03, 2019

March 06, 2020

মাদকাসক্তি
মাদকাসক্তি

মাদকাসক্তি কি?

মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে প্রতিটি মানুষের মস্তিষ্কে ও শরীরে আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কোনো ব্যক্তি মাদকদ্রব্য সেবন করলেও সে সঙ্গে সঙ্গে আসক্ত হয়ে পড়ে না, কিন্তু মাদকের একটানা অনেকদিন ধরে ব্যবহার যেকোনো মানুষের মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকিকে যথেষ্টভাবে বাড়িয়ে তোলে।

মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়াকে মস্তিষ্কের অসুখ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে, যেখানে ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে মাদকের ওপর নির্ভরশীল মনে করতে থাকে এবং বিশ্বাস করে যে মাদক ছাড়া সে কোনো কাজ করতে পারবে না। এই আসক্তিটি সেই ব্যক্তিকে বাধ্য করবে কোন খারাপ পদক্ষেপ গ্রহণ করেও মাদক জোগাড় করতে এবং ক্রমশ বেশি মাত্রায় সেই মাদকটি সেবন করতে যাতে সে এর থেকে তার ইচ্ছাকৃত ফলাফল পেতে পারে।

এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?

আসক্তির কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ নিচে দেওয়া হল। ব্যক্তিটির বাবা-মা এবং বন্ধুদের এই  লক্ষণগুলির সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে যাতে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আসক্ত হয়ে পড়তে থাকা ব্যক্তিটিকে সাহায্য করতে পারে।

এই লক্ষণগুলি হল:

  • সমাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা।
  • খিদে কমে যাওয়া
  • রোজকার জীবনের কাজকর্মের প্রতি উৎসাহ কমে যাওয়া।
  • নিজের শখের কাজগুলি থেকে নিজেকে দূরে রাখা।
  • ঘন ঘন মাদক ক্রয়ের জন্য প্রচুর মাত্রায় টাকার অপব্যবহার করা।
  • পরিবারের সদস্যদের, বন্ধুদের অবহেলা করা এবং এড়িয়ে যাওয়া, ও হাসপাতালে যাওয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া।
  • অকারণে বিরক্ত হওয়া।
  • অকারণে ওজন কমে যাওয়া।
  • অদ্ভুত এবং অস্থির আচরণ করা।
  • মানসিক অসাড়তা এবং আবেগজনিত কারণে সাড়া দেওয়া কমে যাওয়া।

এর প্রধান কারণগুলি কি কি?

মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার কারণগুলি বোঝার জন্য এই সামাজিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যাটিকে একটি বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার প্রয়োজন।

  • মানসিক কারণগুলি, যেমন দীর্ঘকালীন মানসিক চাপ এবং পীড়াদায়ক পরিবেশ একটি মানুষকে মাদক নেওয়ার চেষ্টা করতে বাধ্য করে নিজের মনকে অসাড় করে রাখার জন্য।  
  • কিশোর বয়সে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ার প্রধান কারণ হল সঙ্গীদের চাপ।
  • সামাজিক কারণে মানসিক চাপ, যেমন বাবা মায়ের সঠিক পরিচালনার অভাব, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন, অথবা অল্প বয়সে মাদকের সংস্পর্শে এলে মাদকের অপব্যবহার করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • গবেষকরা এটিও উল্লেখ করেছেন যে কিছু ব্যক্তির জিনগত ভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে পরার সম্ভাবনা থাকে।
  • এটাও বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে  বিভিন্নপ্রকার মাদক সেবনের ফলে বিভিন্ন প্রভাব দেখা যায় এবং প্রত্যেকটি আসক্ত ব্যক্তির  আসক্তির কারণ বিভিন্ন হতে পারে।

এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?    

বেশিরভাগ মানুষ যারা মাদকাসক্ত তারা সঠিক সাহায্য পেলে তাদের আসক্তির কথা স্বীকার করে নেন। ফলে, এটি নির্ণয় করা সহজ হয়ে যায়। তবে, যদি ব্যক্তিটি এবিষয়ে বিস্তারিত বলতে না পারেন, সেক্ষেত্রে রক্তে মাদকের উপস্থিতি সনাক্ত করতে ডাক্তার রক্ত পরীক্ষা করতে পারেন।

মাদকাসক্তির চিকিৎসায় একটি বহুমাত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। মাদকাসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পরিবার এবং সঙ্গীদের কাছ থেকে মানসিক সাহায্য এবং তাদের সমর্থন একটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি, ডাক্তার ব্যক্তিটিকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন।  ওষুধের সাথে সাথে থেরাপিও যোগ করা যেতে পারে যাতে অবস্থার পুনরায় অবনতি না হয়।

মাদকাসক্তির গুরুতর পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।



তথ্যসূত্র

  1. National institute of drug abuse. Understanding Drug Use and Addiction. National Institute of health. [internet].
  2. Easy to read drug facts. What are some signs and symptoms of someone with a drug use problem?. National institute of drug abuse. [internet].
  3. MedlinePlus Medical Encyclopedia: US National Library of Medicine; Drug Abuse
  4. National institute of drug abuse. Principles of Drug Addiction Treatment: A Research-Based Guide (Third Edition). National Institute of health. [internet].
  5. National institute of drug abuse. National Institute on Drug Abuse (NIDA). National Institute of health. [internet].

মাদকাসক্তি জন্য ঔষধ

Medicines listed below are available for মাদকাসক্তি. Please note that you should not take any medicines without doctor consultation. Taking any medicine without doctor's consultation can cause serious problems.