এনজিওইডিমা - Angioedema in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

November 27, 2018

March 06, 2020

এনজিওইডিমা
এনজিওইডিমা

এনজিওইডিমা কাকে বলে?

এনজিওইডিমা হল এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকের নিচে ডারমিসের মধ্যে বা ত্বকের গভীর আবরণ বা টিস্যুর নিচে ফোলাভাব লক্ষ্য করা যায়। এটি সাধারণত কোন ওষুধের অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া, খাবার, ফুলের রেণু, পরিবেশেরই কোন বিষাক্ত পদার্থ অথবা অন্য কোন অ্যালার্জির বস্তুর প্রভাবে হতে পারে। এর ফলে ত্বকের রক্তবাহের মধ্যে ছিদ্র থেকে তরল পদার্থ ক্ষরণ হয়, সেই কারণে, ত্বকের সেই অংশের চারপাশে ফোলাভাব লক্ষ্য করা যায়।

এনজিওইডিমার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?

এতে ঠোঁট, হাত, পা, জিব, এবং চোখের চারপাশে ফোলাভাব লক্ষ্য করা যায়। কখনো কখনো, বড়সড় ও চুলকানি যুক্ত ফুসকুড়ি যাকে আরটিকেরিয়া বা আমবাত বলে, সেরকমও দেখা যায়। এর অন্যান্য লক্ষণগুলি হল ব্যাথা আর হালকা চুলকানি, লালচেভাব, স্থানটিতে একটু উষ্ণভাব প্রভৃতি। ওইডিমা বা ফোলাভাব যদি শ্বাসযন্ত্রের ভিতরের পথে দেখা দেয় তবে শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। ওয়িডিমা যদি গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল বা খাদ্য গ্রহণ ও পরিপাক ক্রিয়া যন্ত্রের অংশের মধ্যে হয়, তাহলে বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, বা যন্ত্রনা হতে পারে।

এর প্রধান কারণগুলি কি কি?

এনজিওইডিমার আসল কারণগুলি এখনও জানা যায়নি। এটা সাধারণত অ্যালার্জির কোন বস্তুর প্রতিক্রিয়াতে, যেমন, ওষুধের প্রভাবে, কীট-পতঙ্গের কামড়ে, রবার গাছের আঠা, পোষা প্রাণীর সান্ন্যিধ্যে, বা খাবারের প্রভাবেও হতে পারে।

কিছু ওষুধের প্রভাবে ওইডিমা হতে পারে। যার মধ্যে, এনজিওটেনসিন কনভারটিং এনজাইম ইনহিবিটরস, নন-স্টেরইয়েডডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ, এবং এনজিওটেনসিন রিসেপটর ব্লকারস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

কোন কোন ব্যক্তির বংশানুক্রমিকভাবে এনজিওইডিমা থাকে, যা জিনগত পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে।

অন্তর্নিহিত কিছু রোগ, যেমন, সংক্রমণ বা ইনফেকসন অথবা লিউকোমিয়া্‌, থাকলে সেক্ষেত্রেও এনজিওইডিমা হতে পারে।

কিভাবে এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা সম্ভব?

প্রাথমিক ভাবে, চিকিৎসক আপনার উপসর্গ অনুযায়ী শারীরিক পরীক্ষা করতে পারেন। তিনি আক্রান্ত জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এবং আপনার কাছে চিকিৎসাগত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন অথবা কোন কিছুতে অ্যালার্জি আছে কিনা জানতে চাইতে পারেন। এর দ্বারা ডাক্তার রোগের কারণ নির্ধারণ করতে পারবেন। কিসে কিসে অ্যালার্জি আছে তা জানতে ডাক্তার কিছু টেস্ট বা পরীক্ষাও করতে দিতে পারেন যেমন, স্কিন প্রিক টেস্ট বা ত্বক ছিদ্র করে করা পরীক্ষা অথবা রক্ত পরীক্ষা। রক্ত পরীক্ষার মধ্যে সি ওয়ান (C1) এসটেরেস ইনহিবিটরের পরীক্ষা করা হয়। রক্তে এই জিনিসটির কম থাকা সমস্যাটিকে বংশানুক্রমিক বলে নির্দেশ করে। পরীক্ষার অস্বাভাবিক ফলাফল যেমন, সি টু বা সি ফোরের (C2 বা C4) পূর্ণ সংখ্যায় উপস্থিতি শরীরের আভ্যন্তরীণ কোন কারণে হতে পারে।

এনজিওইডিমার কারণের উপর নির্ভর করে ডাক্তার ওষুধ দিয়ে থাকেন। কখনো কখনো, এই অবস্থার জন্য কোন ওষুধ লাগে না এবং নিজে থেকেই এটি ঠিক হয়ে যায়। যদিও, যদি সংক্রামণ মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছোয় তখন বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। যাতে ফোলাভাব, চুলকানি এবং ব্যাথা কমে যায়।

সাধারণত যে ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলির মধ্যে আছে চুলকানি কমানোর জন্য ওষুধ, জ্বালাভাব কমানোর জন্য ওষুধ, যে ওষুধ প্রতিরোধ শক্তি দমন করে, ব্যাথা এবং ফোলাভাব কমানোর ওষুধ।

যদি এনজিওইডিমা অ্যালার্জির কারণে হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে যে কারণে হচ্ছে সেটা এড়িয়ে চলতে হবে। এই অবস্থায় অ্যান্টি-হিস্টামিনিক এবং স্টিরয়েডাল ওষুধ ব্যবহার করা যায়।

যদি এনজিওইডিমা কোন ওষুধ ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে, তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ওষুধ বন্ধ করতে হবে বা পরিবর্তন করে সহ্য হবে এমন ওষুধ দিতে বলতে হবে।

বংশানুক্রমিক এনজিওইডিমার কোন চিকিৎসা নেই। কিন্তু উপসর্গগুলি দূর করার জন্য ওষুধ দেওয়া যেতে পারে যেগুলি সি ওয়ান (C1) এসটেরেস ইনহিবিটর-এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।



তথ্যসূত্র

  1. National Health Service [Internet]. UK; Treatment - Angioedema
  2. MSDmannual consumer version [internet].Angioedema. Merck Sharp & Dohme Corp. Merck & Co., Inc., Kenilworth, NJ, USA
  3. Australasian Society of Clinical Immunology and Allergy. Angioedema. Australia; [internet]
  4. American Academy of Family Physicians. Urticaria and Angioedema: A Practical Approach. Am Fam Physician. 2004 Mar 1;69(5):1123-1129.
  5. Allen P Kaplan. Angioedema. World Allergy Organ J. 2008 Jun; 1(6): 103–113. PMID: 23282406